DinajpurBD

দিনাজপুরে আম ও লিচুর ফলন বিপর্যয়

Posted December 25th, 2012 by |

 দিনাজপুরে আম ও লিচুর ফলন বিপর্যয়


সানি সরকার, জেলা প্রতিনিধি
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

25.12.2012

দিনাজপুর: প্রচণ্ড খরা, বৈরী আবহাওয়া, রোগবালাই আর পোকা-মাকড়ের আক্রমণে দিনাজপুরে আম ও লিচুর ফলনে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। ফলে লোকসানের মুখে পড়েছেন বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা।

এবার আমের অফইয়ার। তাই স্বাভাবিকভাবেই গাছে মুকুল এসেছিল কম। তারপরও বাম্পার ফলনের আশা করেছিলেন বাগান মালিকরা। কিন্তু তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া ও গরম বাতাসের কারণে গুটি আম ঝড়ে পড়তে শুরু করে। অন্যদিকে তিন দফা শিলাবৃষ্টির কারণে ঝরে পড়ে আমের মুকুল।

দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আনোয়ারুল আলম বাংলানিউজকে জানান, দিনাজপুরে আম বাগানের সংখ্যা ২ হাজার ১২৬ টি। বাগান হিসেবে ১ হাজার ৫৪৭ হেক্টর ও বসতবাড়ির ১ হাজার ৬২৪ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়ে থাকে। প্রতি হেক্টর জমিতে ১৪ দশমিক ৭৯ মে. টন আমের ফলন হয়ে থাকে।

দিনাজপুরে আমের জন্য প্রসিদ্ধ কসবা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, গাছে আম নেই। কমবেশি যা আছে, তাতেও পোকা আক্রমণ করেছে। দিনাজপুরে ফজলী, গোপালভোগ, মিশুরি, ল্যাংড়া, ভাদুরিয়া, আশ্বিনী, কুয়াপাহাড়ি, সুমরাই, গুটি, মধুচুসি ও সিন্দুরিয়া জাতের আম হয়ে থাকে।

এখানকার বাগান মালিকরা বাণিজ্যিক ভিত্তিতে আমের চাষ করে থাকেন।

আম ব্যবসায়ী মকলেস উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, প্রথম দিকে আমের মুকুল এলেও কুয়াশার কারণে অনেক মুকুল ঝরে গেছে। এরপরও যে আম ধরেছিল শিলাবৃষ্টির কারণে তারও অনেক ঝরে যায়।

তিনি জানান, বর্তমানে আম ঝরে যাচ্ছে পোকার আক্রমণ ও তাপদাহে। গতবছর তার বাগান থেকে ৪৭ মণ আম বিক্রি করা হয়। কিন্তু এবার সেই বাগান থেকে ১৫ মণ আম পাবেন কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
 
বাগান মালিক সামসুদ্দিন জানান, এবার আমের ফলন খুবই কম। গতবারের তুলনায় এবার ৭৫ শতাংশ কম ফল টিকেছে। এছাড়া আমে এবার পোকার উপদ্রব বেশি। কীটনাশক দিয়েও কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না।

এদিকে লিচুর জেলা হিসেবে বিখ্যাত দিনাজপুরে লিচুর ফলনেও বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।

লিচু ব্যবসায়ী ও বাগান মালিকরা জানান, লিচুর জন্য এবার আবহাওয়া অনুকূল নয়। এরমধ্যে শিলাবৃষ্টিতে ঝড়ে পড়েছে লিচুর গুটি। শিলাবৃষ্টির হাত থেকে যেগুলো রক্ষা পেয়েছে, তা এখন রোদের তাপে ঝলসে যাচ্ছে। তাপমাত্রার কারণে লিচুর ক্ষতি হচ্ছে বলে তিনি জানান।

দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের সূত্র মতে, এবার দিনাজপুরে ১ হাজার ৯৫৬ হেক্টর জমিতে লিচু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৫৫৪ হেক্টর বাগানের জমিতে ও বসতবাড়িতে ৪০২ হেক্টর।

উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১১ হাজার ২৩০ মেট্রিক টন। এরমধ্যে বাগানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৯ হাজার ১৩০ মেট্রিক টন ও বসতবাড়িতে ২ হাজার ১০০ মেট্রিক টন।

লিচু ব্যবসায়ী রিয়াজউদ্দিন বাবু জানান, তিনি ৮৫টি গাছ ১ লাখ ৫ হাজার টাকায় ৫ বছরের জন্য ঠিকা নিয়েছেন। গত তিনবছরে গাছগুলোতে কোনো ফল ধরেনি। এবার ফলন হলেও গরমের লিচু ঝলসে যাচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৮ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০১২
সম্পাদনা: রোকনুল ইসলাম কাফী, নিউজরুম এডিটর